পৃথিবী সময়ের চেয়ে দ্রুত গতিতে চলেছে গত ৫০ বছরের তুলনায়। কীভাবে এই ব্যাপারকে সামলানো যায় তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা চিন্তায় পড়েছেন। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবী ২৪ ঘণ্টার আগেই তার নিজের অক্ষের ওপর ঘোরা সম্পন্ন করে ফেলছে।
২৪ ঘণ্টা একদিন মানে। সকলেরই জানা সময়ের এই মাপকাঠি। পৃথিবীর নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘুরতে যে সময় লাগবে, তাই একটি দিন। কিন্তু এখানেই তৈরি হয়েছে জটিলতা। ইন্টারন্যাশানাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সার্ভিসের পর্যবেক্ষেণে বলা হয়েছে, পৃথিবী ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে ঘূর্ণন শেষ করছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ০.৫ মিলি সেকেন্ডের কম সময় নিয়ে ঘুরছে বর্তমানে পৃথিবী। যার ফলে ২৪ ঘণ্টা থেকে ০.৫ মিলি সেকেন্ড কমে গেছে। সময়ের এই সামান্য পরিবর্তন সাধারণ মানুষের জন্য তেমন সমস্যার না হলেও বিজ্ঞানীরা রীতিমতো চিন্তিত।
কেননা ১৯৬০ সাল থেকেই স্যাটেলাইট এবং অন্যান্য মহাজাগতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সময়ের সঠিক হিসাব রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোট ২৭ লিপ সেকেন্ড যুক্ত করতে হয়েছে অ্যাটমিক ঘড়িতে। কারণ পৃথিবী ধীরে ঘুরছিল সেসময়। কিন্তু এবার জোড়ে ঘুরছে। ফলে এবার কী একটি নেগেটিভ লিপ-সেকেন্ড যোগ করা হবে? এই প্রশ্নের এখনও কোনো উত্তর দেননি বিজ্ঞানীরা। তবে এটাই একটা বড়ো প্রশ্ন, পৃথিবীর আহ্নিক গতির সময় কেন কমে আসছে।
পৃথিবী সূর্যের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলেই তার আহ্নিক গতি বেড়ে গেছে প্রথমে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু আরও দেখা যায় নিখুঁত পর্যবেক্ষণে, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব যতটা কমেছে তার থেকে অনেক কমেছে দিনের দৈর্ঘ্য। অতএব অন্যকিছু এর কারণ। এমনকি বিশ্ব-উষ্ণায়নকেও এর জন্য দায়ী করছেন কেউ কেউ। মেরু অঞ্চলের বরফ গলে ভরের বণ্টন বদলে যাচ্ছে। আর এটাই সম্ভবত দিনের দৈর্ঘ্য কমে আসার প্রকৃত কারণ। তবে আরও বিশদে গবেষণা না করে কোনোকিছুই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কম সময়ের মধ্যে ঘূর্ণন শেষ করছে পৃথিবী গতবছরের জুন থেকে ২৪ ঘণ্টার।
