প্রায় ২০ হাজার রোগীর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তাদের অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও। ওয়ার্ল্ডমিটারের একটি সূত্র জানিয়েছে, গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ১৯ হাজার ৬৩ জন করোনা রোগী যুক্তরাষ্ট্রে।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, দৈনিক করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে টানা ছয় দিন রেকর্ড হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত ছয় দিনের প্রতি দিনই নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ১ লাখের বেশি। এরই মধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোয় ৫৯ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী ভর্তি ছিল স্থানীয় সময় সোমবার (৯ নভেম্বর) যা একটি রেকর্ড। এর আগে গত ২২ জুলাই সর্বোচ্চ ৫৮ হাজার ৩৭০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিল।
বলা হয় রয়টার্সের প্রতিবেদনে, ফাইজারের ভ্যাকসিন সুখবর দিলেও যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এই উচ্চহার ভয়াবহ শঙ্কার জন্ম দিচ্ছে। এর কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ ফাইজারের ভ্যাকসিনটি তৃতীয় ধাপ উতরে গেছে এবং করোনার বিরুদ্ধে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ভ্যাকসিন আনায় ফাইজারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ভ্যাকসিনটি সবচেয়ে বেশি অসুস্থ রোগী ও সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের আগে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, বলে মনে করা হচ্ছে তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ভীষণ কঠিন হবে। এই সময়ে সংক্রমণ সংখ্যার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আক্রান্তদের কতজন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন করোনাভাইরাস মহামারির সেই সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ১০৩ জন কোভিড-১৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে এ সংখ্যা ৪ হাজার ৪০৯ ও ক্যালিফোর্নিয়ায় ৩ হাজার ৬৬৮।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ১০ দিনে নতুন করে ১০ লাখের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম ধাপে যে গতিতে ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার হয়েছিল, তার চেয়ে এই দ্বিতীয় ধাপের গতি অনেক বেশি। ১০ নভেম্বর ও এর আগের সাত দিনে নতুন সংক্রমণ হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজারের বেশি, যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি। আর মৃতের সংখ্যা ১০ শতাংশ বেশি আগের সপ্তাহ থেকে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট ১ কোটি ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জো বাইডেন নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে। তিনি মাস্ক পরার ওপর জোর দিচ্ছেন। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি, তাতে এই মোকাবিলার সরাসরি সুযোগ বাইডেন পাওয়ার আগেই অনেক জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
